ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের উপায় ও অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের উপায় ও অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি

বাংলাদেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা ভোক্তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। ভোক্তাদের সুবিধার্থে সরকার ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ প্রণয়ন করেছে। এই আইন অনুযায়ী, পণ্য বা সেবায় কোনো প্রতারণা, মানহীনতা, কিংবা অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের ক্ষেত্রে ভোক্তারা অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের উপায় সমূহ:
১. সচেতনতা বৃদ্ধি: ভোক্তাদের অধিকার ও করণীয় সম্পর্কে সচেতন থাকা খুবই জরুরি। পণ্যের মোড়ক, গুণগত মান, পন্যের মেয়াদ এবং দাম যাচাই করা উচিত।
২. প্রমাণপত্র সংরক্ষণ: ক্রয় করা পণ্য বা সেবার রশিদ বা বিল সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তা অভিযোগ দাখিলের সময় প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩. উপযুক্ত পরামর্শ গ্রহণ: কোনো সমস্যা দেখা দিলে ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত আইনজীবী বা পরামর্শদাতার সঙ্গে আলোচনা করা ভালো।
৪. প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া: কোনো প্রতারণা বা অসঙ্গতি দেখতে পেলে সরাসরি অভিযোগ দাখিল করা উচিত। সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
কে অভিযোগকারী হতে পারেন?
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে, যে কেউ একজন ভোক্তা হিসেবে আইনগত সুবিধা নিতে পারেন। তবে নিম্নোক্ত ব্যক্তিরা অভিযোগকারী হতে পারেন:
১.ভোক্তা নিজে (যিনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন)
২.ভোক্তার প্রতিনিধি বা তার পক্ষে কেউ
৩.কোনো ভোক্তা সংস্থা বা সংগঠন
৪.সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাগণ

অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি:
১. অভিযোগের ধরন নির্ধারণ: প্রথমে সমস্যার ধরন নির্ধারণ করতে হবে। যদি কোনো পণ্য বা সেবা নিয়ে প্রতারণা, ভেজাল, মূল্য অতিরিক্ত আদায় কিংবা পণ্যের মানহীনতা দেখা যায়, তখন অভিযোগ দায়ের করা যাবে।
২. দলিল ও প্রমাণপত্র সংগ্রহ: অভিযোগের সঙ্গে প্রয়োজনীয় দলিল যেমনঃ রশিদ, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্যের ছবি বা মানহীন পণ্যের প্রমাণাদি সংযুক্ত করতে হবে।
৩. অনলাইনে অভিযোগ দাখিল: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (DNCRP) ওয়েবসাইটে অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করা যায়। তাদের ওয়েবসাইট: www.dncrp.gov.bd।
৪. অফলাইনে অভিযোগ দাখিল: সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর বা জেলা অফিসে সরাসরি লিখিত অভিযোগও জমা দিতে পারেন। লিখিত অভিযোগে অভিযোগকারী এবং অভিযোগের বিবরণ থাকতে হবে।
অভিযোগ দাখিলের সময়সীমা:
৩০ দিনের মধ্যে:
ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী, কোনো পণ্য বা সেবা প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ দাখিল করতে হয়। এই সময়সীমা অতিক্রম হলে অভিযোগ গ্রহণ করা নাও হতে পারে।
অভিযোগ দাখিলের স্থান:
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (DNCRP): ঢাকায় প্রধান কার্যালয় এবং বিভিন্ন জেলায় শাখা অফিস রয়েছে।
অন্যান্য সরকারি অফিস:
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় বা ইউনিয়ন পরিষদে সংশ্লিষ্ট বিভাগে অভিযোগ জমা দেওয়া যায়।
অভিযোগ তদন্ত ও সমাধান:
অভিযোগ দাখিলের পর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করবে এবং প্রমাণিত হলে প্রতারণা বা অনিয়মের জন্য দায়ী প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি প্রদান করবে। ভোক্তা ক্ষতিপূরণও পেতে পারেন।

বাংলাদেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের অধীনে প্রতিটি নাগরিকের ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করা হয়। তাই ভোক্তাদের উচিত সচেতনভাবে পণ্য ও সেবা কেনা এবং কোনো সমস্যা দেখা দিলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা।

ekta cover lagbe

Recent Posts
Popular Posts

Book A free Consultation

Call us +8801787-696522 or fill out the form below to receive a free and confidential initial consultation.

Click To Contact
Dr. Gazi & Associates
Hello!
Get the best lawyer for any kind of solution for you.